1. provatsangbad@gmail.com : প্রভাত সংবাদ : প্রভাত সংবাদ
  2. mdjoy.jnu@gmail.com : dainikjoybarta.online : Shah Zoy
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০৭:৩০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে ঐকতান পরিবার’র রবীন্দ্র জয়ন্তী স্মরণানুষ্ঠান কুমিল্লায় পশুরহাটের ইজারাদারদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মতবিনিময় সভা কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্র সহ কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেফতার কুমিলা বুড়িচংয়ে খামার ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণ বায়োগ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন কুমিল্লা গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ কুমিল্লায় পৃথক দু’টি লাশ উদ্ধার কুমিল্লা বুড়িচংয়ে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি ঘর পুড়ে ছাই; ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় ডোবার পানিতে পরে মামা ভাগনের মৃত্যু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে ৩৬ টাকা দরে বোরো ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে আ’লীগ নেতা সাহেব আলী চেয়ারম্যান গ্রেফতার

কেয়ামতের আলামত (৭পর্ব )

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১
  • ৬৬৯ বার পড়া হয়েছে

প্রভাত সংবাদ ডেস্ক : রূম বিজয়ঃ হাদীসে তৃতীয় পর্যায়ে রূম বিজয়ের কথা বলা হয়েছে, আরব উপদ্বীপ যেমন বিভিন্ন যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় হয়েছিল পারশ্য বিজয়ের জন্যও মুসলমানদেরকে কয়েকটি যুদ্ধ করতে হয়েছিল। এমনিভাবে রূম বিজয়ের পূর্বেও মুসলমানদেরকে খৃষ্টানদের সাথে কয়েকটি যুদ্ধ করতে হবে। যার মধ্যে অনেক গুলাে হয়ে গেছে আবার অনেক চলছে, আরাে অনেক
ভবিষ্যতে হবে, যার সর্বশেষ বিজয় হবে খুররুম ইনশাআল্লাহ্।
কোন কোন ওলামাগণের মতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীতে যখন মুসলমানরা ইউরূপের কোন কোন এলাকা বিজয় করেছিল ঐ সময় ইটালীও বিজয় হয়েছিল, রূম বিজয়ের উদ্দেশ্য ঐ বিজয়ই। কিন্তু হাদীসের আগের ও পরের বর্ণনা অনুযায়ী এটা সঠিক বলে প্রমাণিত হয় না। হাদীসে একথা স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়েছে রূম বিজয়ের পর পরই দাজ্জালের আগমন হবে, এর অর্থ হল হাদীসে যে বিজয়ের কথা বলা হয়েছে তা হবে কিয়ামতের পূর্বে দাজ্জালের আগমনের আগে আগে ইনশাল্লাহ্!

উল্লেখ্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর যুগে রূম ও পারশ্যের মত পৃথিবীর
দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তির একটি দেশ ছিল, যারা খৃষ্টান ধর্মের অনুসারী ছিল। তাই হাদীসে রূম বিজয়ের অর্থ শুধু রূম শহর বিজয় নয়, বরং সমস্ত খৃষ্টান বিশ্ব বিজয় উদ্দেশ্য। রূম শব্দটি শুধু খৃষ্টানধর্মের আলামত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর
যুগে রূম সম্রাজ্য নিন্ম লিখিত এলাকা সমূহের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইউরূপের কিছু কিছু রাষ্ট্র, তুর্কী,
সিরিয়া, মিশর, লেবানন, ওমান, ফিলিস্তিন, জর্ডান, কারুস, সাদুম এবং রােস।

রূম বিজয়ের পূর্বে মুসলমান এবং খৃষ্টানদের মাঝে সংগঠিত যুদ্ধ সমূহের মধ্যে হাদীস সমূহে আরাে একটি যুদ্ধের কথা পাওয়া যায়, যদিও ঐ যুদ্ধের সময় ও স্থান সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়, তবুও অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় যে, ঐ যুদ্ধ রূম বিজয়ের কিছু দিন পূর্বে সিরিয়ার পাহাড়ী এলাকাসমূহে সংগঠিত হবে। কেননা রূম বিজয়ের সাথে সাথেই দাজ্জালের আগমন হবে এবং ঈসা (আঃ) এর নেতৃত্বে তার বিরােদ্ধে যুদ্ধ শুরু হবে। (এব্যাপারে আল্লাহই ভাল জনেন।)
এখানে আমি রূম বিজয়ের পূর্বে দুটি যুদ্ধের সার সংক্ষেপ বর্ণনা করছি। এর বিস্তারিত
বর্ণনা এ গ্রন্থের ‘ মালাহেম ’ যুদ্ধের বর্ণনা অধ্যায়ে পাওয়া যাবে।

ক- রূম পতনের পূর্বে যুদ্ধঃ মুসলমান ও খৃষ্টান মিলে কোন বহিশত্রুর বিরােদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং তাদের সেখানে বিজয় হবে, এর পর মুসলমান ও খৃষ্টানরা পরস্পরে গনীমতের মাল ভাগ করে নিবে। এর পর উভয় দল পাহাড়ী এলাকায় তাবু ফেলবে, ওখানে কোন একজন খৃষ্টান কমান্ডার উঠে ঘােষণা দিবে যে, “ক্রসেডের বিজয় হয়েছে তখন একজন আত্বসম্মান বোধ সম্পন্ন মুসলমান দাঁড়িয়ে তাকে ধমক দিবে, ফলে উভয় দলের মাঝে ঝগড়া শুরু হবে, যার ফলে খৃষ্টানরা সন্ধি ভঙ্গ করবে, মুসলমানদের কাছ থেকে বদলা নেয়ার জন্য ৮০ টি খৃষ্টান দেশ একত্রিত হবে, এক রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধের পর মুসলমানদের সমস্ত সৈন্য শহিদ হয়ে যাবে এবং
খৃষ্টানরা বিজয়ী হবে।

খ-রূমের পতন ও রূমের যুদ্ধ কিয়ামতের পূর্বে সর্ববৃহৎ যুদ্ধ হবে, যার পর কিয়ামতের
বড় বড় আলামত সমূহ প্রকাশ পেতে থাকবে, যুদ্ধের বিস্তারিত বর্ণনা নিন্ম রূপঃ
সিরিয়ান মুসলমান ও খৃষ্টানদের মাঝে এক যুদ্ধ হবে যেখানে মুসলমানদের বিজয় হবে, তখন তারা খৃষ্টান পুরুষ ও নারীদেরকে নিজেদের গােলাম বানিয়ে নিবে। খৃষ্টান বাহিনী মুসলমানদের কাছ থেকে বদলা নেয়ার জন্য সিরিয়ার ওপর হামলা করবে। সিরিয়ার হালব নগরীর আমাক বা দাবেক নগরীতে যুদ্ধ হবে, এর পূর্বে মদীনা থেকে মুসলমানদের একটি সৈন্যদল সিরিয়ার মুসলমানদেরকে সাহায্য করার জন্য আমাক বা দাবেকে আসবে, তখন খৃষ্টান কমান্ডার মদীনার কমান্ডারকে বলবেঃ তোমরা সিরিয়ার সৈন্যদের কাছ থেকে দূরে থাক, তারা আমাদের নারী পুরুষদেরকে গােলাম বানিয়েছে, তাই আমরা শুধু তাদের সাথেই যুদ্ধ করতে চাই। মদীনার সৈন্য দলের কমান্ডার বলবে“ আল্লাহ্ কসম আমরা আমাদের মুসলমান ভাইদেরকে কখনাে একা একা ছাড়ব না “। তখন মুসলমান ও খৃষ্টানদের মাঝে তুমুল যুদ্ধ শুরু হবে এবং মুসলমানদের এক তৃতীয় অংশ সৈন্য নিহত হবে, যারা আল্লাহর নিকট শাহাদাতের উত্তম মর্যাদা লাভ করবে। সৈন্যদের একদল যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে যাবে, তাদের তাওবা আল্লাহ্ কবুল করবে না। বাকী এক অংশের হাতে বিজয় অর্জিত হবে যাদেরকে আল্লাহ্ সর্ব
প্রকার ফেতনা থেকে রক্ষা করবেন। সিরিয়ায় খৃষ্টানদের পরাজয়ের পর মুসলমানরা খৃষ্টানদের
প্রাণকেন্দ্র রূমে আক্রমণ করবে, স্থল ও নদী পথে তুমুল যুদ্ধ হবে। স্থল পথে কুস্তুনতুনিয়া
(ইস্তাম্বুলের পুরানাে নাম) যুদ্ধ হবে, এ যুদ্ধে সত্তর হাজার মুসলমান অংশগ্রহণ করবে, ইস্তামবুলে ইসলাম ও খৃষ্টানদের মাঝে এ হবে সর্বশেষ যুদ্ধ, যেখানে আল্লাহ্ সাহায্যের অভুতপূর্ব নমুনা দেখা যাবে। সেখানে অস্ত্র ব্যবহারের সুযােগ হবে না। মুসলমানরা প্রথমে নারে তাকবীর, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আল্লাহু আকবার বলবে, এতে শহর রক্ষাকারী একটি দেয়াল পড়ে যাবে, দ্বিতীয় বার নারে তাকবীর বলাতে অপর দেয়ালটিও পড়ে যাবে। তৃতীয় বার নারে তাকবীর দেয়াতে শহর বিজয় হয়ে যাবে। অপর প্রান্তে রূমে এত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হবে যে, ইতি পূর্বে এত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর কখনাে হয়নি। একাধারে চার দিন পর্যন্ত যুদ্ধ হবে, প্রথম তিন দিন মুসলমানদের পরাজয় হবে, প্রতি দিন যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সমস্ত সৈন্য নিহত হয়ে যাবে। চতুর্থ দিন আল্লাহ্’র দয়া ও অনুগ্রহে
মুজাহিদরা বিজয় লাভ করবে। এ যুদ্ধে ৯৯ পারসেন্ট লােক মারা যাবে, যুদ্ধের ময়দান বহুদূর
পর্যন্ত লাশের স্তুপে পরিণত হবে; এমনকি কোন একটি প্রাণীও যদি লাশের ওপর দিয়ে অতিক্রম
করতে চায়, তাহলে তা মারা যাবে, কিন্তু লাশ অতিক্রম করা শেষ হবে না। রূম বিজয়ের পর
মুসলমানরা গনীমতের মাল বন্টন করতে থাকবে এমতাবস্থায় তারা দাজ্জালের আগমন বার্তা লাভ
করবে। তখন তারা সব কিছু রেখে সিরিয়ার দিকে বের হবে, আর তা হবে দাজ্জাল বিরােধী
যুদ্ধের স্থান। দাজ্জালের আগমনের পূর্বে ইমাম মাহদীর খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে, অতএব রূমের
পতন তার নেতৃত্বেই শুরু হবে (এব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন)।
৪-দাজ্জাল হত্যাঃ রূম বিজয়ের পর পরই ইহুদীদের নেতা দাজ্জালের আগমন ঘটবে, পৃথিবীর সমস্ত ইহুদী, কাফের এবং মােনাফেক তার সাথে মিলে যাবে, শুধু ইরানের ইস্পাহান থেকে সত্তর হাজার ইহুদী তার দলে যােগ দিবে, দাজ্জাল মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না। মক্কা ও মদীনার সংরক্ষণের জন্য আল্লাহ্ ফেরেতাদেরকে পাহাড়াদার নিযুক্ত করবেন।
মক্কা ও মদীনা ব্যতীত সারা পৃথিবীতে দাজ্জাল ঘুরবে। যখন সিরিয়ার রাজধানী দামেশকে
পৌঁছবে তখন ‘ গােতা নামক স্থানে মুসলমানদের সাথে তার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হবে। দাজ্জাল দামেশকে থাকা অবস্থায়ই ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। এর পর তিনি দাজ্জালকে ধাওয়া করবেন এবং ‘ লুদ ’ নামক স্থানে তাকে স্বীয় তীর দিয়ে হত্যা করবেন। এ হল ঐ চারটি বিজয়ের ঘটনা যা মােহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নবুয়ত প্রাপ্তির পর থেকে নিয়ে ঈসা (আঃ) এর পুনরাগমন পর্যন্ত হবে। এর মধ্যে দু’টি বিজয়ের ঘটনা সাহাবা ও তাবেঈনদের যুগের সাথে সম্পৃক্ত, আর দু’টি কিয়ামতের খুব কাছা কাছি সময়ের সাথে সম্পৃক্ত।
হাদীসে উল্লেখিত বিজয়সমূহ ব্যতীত যুদ্ধ সম্পর্কে আরাে একটি গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনাও এসেছে যা
এখানে উল্লেখ করা উপযুক্ত বলে মনে হচ্ছে, আর তাহলঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “বাইতুল মাকদেস আবাদ হবে, আর এর পর মদীনা অনাবাদী হয়ে যাবে,মদীনা অনাবাদী হওয়ার পর বড় বড় যুদ্ধ সমূহ শুরু হবে, যার ফলে কুস্তুনতুনিয়া বিজয় হবে! কুস্তুনতুনিয়া বিজয়ের পর দাজ্জাল আসবে”। (আবুদাউদ)

হাদীসের শেষ অংশে যে দুটি যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার বর্ণনা পূর্বে অতিক্রম
হয়েছে অর্থাৎ ঃ রূমের পতন ও দাজ্জাল হত্যা। অবশ্য পূর্বের দু’টি বর্ণনা নুতন, অবস্থা দৃষ্টে
মনে হয় যে, চারটি ঘটনাই কিয়ামতের খুব নিকটবর্তী সময়ে সংঘটিত হবে। বাইতুল মাকদেস
মুসলমানদের দখলে চলে আসবে, আর সম্ভবত তাকে ইসলামী হুকুমতের রাজধানী করা হবে,
এতে তার সম্মান বৃদ্ধি পাবে। এতুলনায় মাদীনার জাকজমক কমে যাবে, বাইতুল মাকদেস
মুসলমানদের অধিনস্ত হওয়ার পর কিয়ামতের নিকটবর্তী যুদ্ধসমূহ শুরু হয়ে যাবে। যার সর্বশেষ
ফলাফল হবে রূমের পতন ও দাজ্জাল হত্যা। দাজ্জাল নিহত হওয়ার পর ইয়াজুজ মাজুজের হত্যা ও রক্তপাতের ফেতনা শুরু হবে, কিন্তু মুসলমানরা এ ফিতনার মােকাবেলা করতে পারবে না।
ঈসা (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে মুসলমানদেরকে তুর পাহাড়ে নিয়ে যাবেন, আর যারা বাকী থাকবে
তারা এদিক সেদিক কেল্লা সমূহে আশ্রয় নিয়ে নিজেদেরকে সংরক্ষণ করবে। দাজ্জাল নিহত
হওয়ার পরই জিহাদ ফরজ হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যাবে। (এব্যাপারে আল্লাহ্ই ভাল জানেন)।
——————-(চলবে)
প্রভাত সংবাদ / র আ

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন