1. provatsangbad@gmail.com : প্রভাত সংবাদ : প্রভাত সংবাদ
  2. mdjoy.jnu@gmail.com : dainikjoybarta.online : Shah Zoy
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে ঐকতান পরিবার’র রবীন্দ্র জয়ন্তী স্মরণানুষ্ঠান কুমিল্লায় পশুরহাটের ইজারাদারদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মতবিনিময় সভা কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্র সহ কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেফতার কুমিলা বুড়িচংয়ে খামার ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণ বায়োগ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন কুমিল্লা গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ কুমিল্লায় পৃথক দু’টি লাশ উদ্ধার কুমিল্লা বুড়িচংয়ে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি ঘর পুড়ে ছাই; ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় ডোবার পানিতে পরে মামা ভাগনের মৃত্যু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে ৩৬ টাকা দরে বোরো ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে আ’লীগ নেতা সাহেব আলী চেয়ারম্যান গ্রেফতার

জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি -(পর্ব-৭)

  • প্রকাশিত: রবিবার, ৬ মার্চ, ২০২২
  • ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে

প্রভাত সংবাদ: ৫ – গুর্জ ও হাতুড়ির আঘাতের মাধ্যমে আযাবঃ
জাহান্নামে কাফের ও মােশরেকদেরকে গুর্জ ও লােহার হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের মাধ্যমে শাস্তি
দেয়া হবে ।কোরআন ও হাদীস উভয়েই এর প্রমাণ রয়েছে।
আল্লাহর বাণী ঃ
ولهم مقامع من حديد (سورة الحج -۲۱)
অর্থ :“আর তাদের জন্য থাকবে লৌহ গুর্জসমূহ” । (সূরা হাজ্জ- ২১)
হাদীসে নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন কাফেরদেরকে মারার গুর্জের
ওজন এত বেশি হবে যে,যদি একটি গুর্জ পৃথিবীর কোথাও রাখা হয়,আর পৃথিবীর সমস্ত জ্বিন ও
ইনসান তা উঠানাের জন্য চেষ্টা করে,তাহলে তারা তা উঠাতে পারবে না। (মােসনাদ আবু ইয়ালা)

জাহান্নামের পূর্বে কবরেও কাফেরদেরকে গুর্জ ও হাতুড়ি দিয়ে মারা হবে। কবরের আযাবের বিস্তারিত বর্ণনা দিতে গিয়ে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেনঃমােনকার ও নাকীরের প্রশ্ন উত্তরে নিষ্ফল হওয়ার পর,কাফেরদের জন্য অন্ধ ও মূক ফেরেশতা নিয়ােগ করা হবে,তাদের
নিকট লােহার গুর্জ থাকবে,আর তা এত ভারী হবে যে,যদি কোন পাহাড়ের ওপর তা দিয়ে
আঘাত করা হয়,তাহলে পাহাড় অণু অণু হয়ে যাবে। ঐ গুর্জ দিয়ে অন্ধ ও মূক ফেরেশতা তাকে
মারতে থাকবে আর সে চিল্লাতে থাকবে।
নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেনঃ কাফেরের চিল্লানাের আওয়াজ পূর্ব ও পশ্চিমের
মাঝে মানুষ ও জ্বিন ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টি জীব শুনে, ফেরেশতার আঘাতে কাফের মাটির ন্যায় অণু
অণু হয়ে যাবে,তখন সেখানে আবার রূহ ফেরত দেয়া হবে। (মােসনাদ আবু ইয়ালা)

কিয়ামত পর্যন্ত বারং বার এ অবস্থা চলতে থাকবে।
জাহান্নামের শাস্তি কবরের শাস্তির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি কঠিন ও বেদনা দায়ক হবে। কবরে
হাতুড়ি ও গুর্জ দিয়ে আঘাতকারী ফেরেশতা যদি অন্ধ ও মূক হয় তাহলে জাহান্নামের ফেরেশতা
সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ্ বলেন ঃ
عليها ملائكة غلاظ شداد (سورة التحريم-6)
অর্থঃ“তাতে নিয়ােজিত আছে নির্মম হৃদয় ও কঠোর স্বভাব বিশিষ্ট ফেরেশতা”। (সূরা তাহরীম –
ইকরেমা(রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃজাহান্নামীদের প্রথম গ্রুপ যখন সেখানে
যাবে তখন দেখবে যে,দরজার সামনে চার লক্ষ ফেরেশতা তাদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য অপেক্ষা
করছে। যাদের চেহারা হবে অত্যন্ত ভয়ানক ও খুবই কাল। আল্লাহ্ তাদের অন্তর থেকে দয়া- মায়া বের করে নিয়েছেন,ফলে তারা হবে অত্যন্ত নির্দয়। এ ফেরেশতাদের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট হবে এই যে,
تابعون الله ما أمرهم ويفعلون ما يؤمرون (سورة التحريم-6)
অর্থঃ“ঐ ফেরেশতারা কখনাে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না,আর তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া
হয় তারা তাই করে”। (সূরা তাহরীম -৬)

অর্থাৎঃআল্লাহ্ ফেরেশতাদেরকে যেমন আযাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তারা সাথে সাথে তেমন
আযাবই দিতে শুরু করবে। এক পলকের জন্যও চিন্তা বা বন্ধ করবে না। এ ফেরেশতারা
কাফেরদেরকে এত কঠিন কঠিন পদ্ধতিতে শাস্তি দিতে থাকবে যে,বড় বড় পাপিষ্টদের কলিজা
চালনির ন্যায় ছিদ্র হয়ে যাবে । (ইবনে কাসীর)
এ হল কাফেরদের পরিণতি ও তাদের কুফরীর শাস্তি। মূলত কাফের আল্লাহর নিকট পৃথিবীর
সর্বাধিক পরিত্যাজ্য ও লাঞ্ছিত সৃষ্টি। পৃথিবীতে ঈমানের সম্পদের চেয়ে মূল্যবান আর কোন
সম্পদ নেই, হায় যদি মুসলমানরা পৃথিবীতে এ সম্পদ কে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারত!
কাফেররা তো নিঃসন্দেহ কিয়ামতের দিন (জাহান্নামের শাস্তি দেখে এ কামনা করবে যে,
وأنهم كانوا يهتدون (سورة القصص -) )
অর্থঃ“হায়! তারা যদি সৎপথ অনুসরণ করত”। (সূরা কাসাস – ৬৪)

৬ – বিষাক্ত সাপ ও বিচ্ছুর ছােবলের মাধ্যমে আযাবঃ
জাহান্নামে বিষাক্ত সাপ ও বিচ্ছুর ছােবলের মাধ্যমেও শাস্তি হবে। সাপ ও বিচ্ছু উভয়কেই
মানুষের দুশমন মনে করা হয়,আর এ উভয়ের নামের মাঝেই এত ভয় ও আতংক রয়েছে
যে,যদি কোন স্থানে সাপ ও বিচ্ছুর অবস্থান সম্পর্কে মানুষ অবগত থাকে,তাহলে সেখানে মানুষের বসবাসের কথাতাে অনেক দূরে,বরং কোন ব্যক্তি ঐ দিক দিয়ে রাস্তা অতিক্রমের ঝুকিও নিতে রাজি হবে না। কোন কোন সাপের আকৃতি, প্রকৃতি, রং, লম্বা,নড়াচড়া, স্বাভাবিকতা এমন থাকে যে,তা দেখা মাত্রই মানুষ সংজ্ঞাহীন হয়ে যায়। সাপ বা বিচ্ছু সর্বাধিক কতটা বিষাক্ত হতেপারে? তার সঠিক জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউ জানে না,কিন্তু অবিজ্ঞতার আলােকে এবং বিভিন্ন পুস্তকে বর্ণিত ব্যাখ্যার আলােকে,এ সিদ্ধান্ত নেয়া দুষ্কর নয় যে,সাপ অত্যন্ত ভয়ানক ও মানুষের জানের শত্রু। দক্ষিণ পূর্ব ফ্রান্সে বিদ্যমান একটি বিষাক্ত সাপ সম্পর্কে কিছু কিছু সংবাদ সূত্রে বলা হয়েছে সেখানকার এক একটি সাপ দেড় মিঃ লম্বা আর এক একটি সাপের বিষ দিয়ে এক সাথে পাচঁজন লােককে নিহত করা সম্ভব।
১৯৯৯ইং, কিং সউদ ইউনির্ভাসিটি রিয়দ,সউদী আরবে ছাত্রদের জন্য একটি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান
করা হয়েছিল। যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অত্যন্ত বিষাক্ত সাপের প্রর্দশনী ও করা হয়েছিল।
যা কাঁচের বক্সে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে কোন কোনটি সম্পর্কে নিন্মােক্ত তথ্য দেয়া
হয়ে ছিল।
আরাবীয়ান কোবরা (Arabian Cobra) যা আরব দেশসমূহে পাওয়া যায় তা এত বিষাক্ত যে,
তার বিষের মাত্র বিশ মিঃ গ্রাম,৭০ কিঃ গ্রাম উজনের মানুষকে সাথে সাথেই ধ্বংস করতে
পারে। আর এ কোবরা তার মুখ থেকে এক সাথে ২০০কিঃগ্রাঃ – ৩০০ কিঃ গ্রাম বিষ দুষমনের
ওপর নিক্ষেপ করে।
‘কান্গ কোবরা’ যা ইন্ডিয়া ও পাকিস্থানে পাওয়া যায় ,এদের ছােবলগ্রস্ত লােকও সাথে সাথেই
মারা যায়। প্রাচ্যের দেশসমূহে বিদ্যমান সাপ সমূহ (West Diamond Back Snack) অত্যন্ত বিষাক্ত সাপের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করা হয়।
ইন্দোনিসিয়ার থুথু নিক্ষেপকারী বিষাক্ত সাপ (Indoesian Spitting Cobra) ২ মিঃ লম্বা
হয়ে থাকে যা ৩মিঃ দূরে থেকে মানুষের চোখে পিচকারীর ন্যায় বিষ নিক্ষেপ করে থাকে,যার
ফলে মানুষ সাথে সাথেই মৃত্যুবরণ করে।
জাহান্নামের পূর্বে কবরেও কাফেরদেরকে সাপের ছােবলের মাধ্যমে আযাব দেয়া হবে। তাই
কবরের আযাবের বর্ণনা দিতে গিয়ে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেনঃযে কাফের
যখন মােনকার নাকীরের প্রশ্নের উত্তরে নিষ্ফল হবে,তখন তার জন্য নিরান্নব্বইটি সাপ নির্ধারণ
করা হবে। যা কিয়ামত পর্যন্ত তাকে ছােবল মারতে থাকবে। কবরের সাপ সম্পর্কে রাসূল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেন যে, যদি ঐ সাপ একবার পৃথিবীতে নিঃশ্বাস ফেলে,তাহলে
পৃথিবীতে কখনাে আর কোন ঘাস উৎপাদিত হবে না। (মােসনাদ আহমদ)
কবরের সাপ সম্পর্কে ইবনে হিব্বানের বর্ণনায়ও এসেছে যে,এক একটি অজগরের সত্তরটি করে
মুখ হবে।যার মাধ্যমে তারা কিয়ামত পর্যন্ত কাফেরদেরকে ছােবল মারতে থাকবে।
জাহান্নামের সাপ সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃসাপের কাঁধ উটের
সমান হবে। আর তার একবার ছােবল মারার ফলে চল্লিশ বছর পর্যন্ত কাফের তার ব্যাথা অনুভব
করবে। (মােসনাদ আহমদ)
নিঃসন্দেহে কবরে ও জাহান্নামে ধংশনকারী সাপ সমূহ পৃথিবীর সাপের তুলনায় বহুগুণ বেশি
বিষাক্ত, ভয়ানক ও আতংক সৃষ্টিকারী হবে। পৃথিবীর কোন সাধারণ সাপের ধংশনে মানুষের যে
অবস্থা হয় তা হল প্রথমত সে বে-হুশ হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত ও ধংশনকৃত অংশটি পক্ষাঘাত গ্রস্ত হয়ে যায়। তৃতীয়তঃ মুখ,কান,এমন কি চোখ দিয়ে ও রক্ত ঝরতে থাকে। শুধু একবার ধংশনের ফলেই এ
অবস্থা হয়। তাহলে চিন্তা করা যেতে পারে যে, যে মানুষকে পৃথিবীর সাপের তুলনায় হাজারগুণ
বেশি বিষাক্ত সাপ বার বার ধংশন করতে থাকবে সে তখন কি পরিমাণ বেদনাদায়ক শাস্তিতে
নিমজ্জিত থাকবে।
(আল্লাহ্ আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন)

বিচ্ছুর ধংশনের প্রতিক্রিয়া সাপের ধংশনের প্রতিক্রিয়ার চেয়ে অধিক বেশি হবে বিচ্ছুর ধংশনের ফলে মানুষের সাথে সাথে নিন্মােক্ত অবস্থা হয়।
প্রতমত ঃ শরীর ফুলে উঠে।
দ্বিতীয়তঃশ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে যায়। দম বন্ধ হয়ে আসে।
জাহান্নামের বিচ্ছুর কথা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
খচ্চরের সমান হবে,আর তার একবার ছােবলের ফলে কাফের চল্লিশ বছর পর্যন্ত ব্যাথা অনুভব
করতে থাকবে। (মােসনাদ আহমদ)
এর অর্থ হল এই যে, বিচ্ছুর বারবার ধংশনের ফলে জাহান্নামী বার বার ফুলে উঠবে এবং দম
বন্ধ হয়ে আসার অবস্থাও বার বার বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এ হবে ঐ কঠিন শাস্তির একটি ধরণ
মাত্র যা কাফেরকে দেয়া হবে। কাফের কি জাহান্নামে ঐ সাপ ও বিচ্ছু সমূহকে মেরে ফেলবে? না কোথাও পালিয়ে যাবে,না কোন আশ্রয়স্থল পাবে ? আল্লাহ্ কতইনা সত্য বলেছেন :
بما يود الذين كفروا لو كانوا مسلمين (سورة الحجر -۲)
অর্থঃ“ কখনাে কখনাে কাফেররা আকাঙ্খ করবে যে , তারা যদি মুসলিম হত”। (সূরা হিযর-২)
কিন্তু হে ঈমানদ্বাররা!জাহান্নাম ও তার আযাবের প্রতি ঈমান আনয়নকারী!তােমরাতাে আল্লাহ’র
আযাব কে ভয় করবে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের নাফরমানী করা থেকে বিরত থাক। আল্লাহ’রআযাব সম্পর্কে যেনে এবং মেনেও যদি তাঁর নাফরমানী করা হয়,তাহলে তাে তা তাঁর আযাবকে আরাে বেশি কঠিন করবে।
فهل أم تهون (سورة المائدة-۹۱)
অর্থঃ“ তােমরা কি তা থেকে বিরত থাকবে” ? (সূরা মায়েদা – ৯১)
—————চলবে।
তথ্য সূত্র : জাহান্নামের বর্ণনা।
#প্রভাত সংবাদ /র আ/৩১

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন