1. provatsangbad@gmail.com : প্রভাত সংবাদ : প্রভাত সংবাদ
  2. mdjoy.jnu@gmail.com : dainikjoybarta.online : Shah Zoy
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ১০:২৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
কুমিল্লায় ২৪ ঘন্টায় ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে ঐকতান পরিবার’র রবীন্দ্র জয়ন্তী স্মরণানুষ্ঠান কুমিল্লায় পশুরহাটের ইজারাদারদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মতবিনিময় সভা কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্র সহ কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেফতার কুমিলা বুড়িচংয়ে খামার ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণ বায়োগ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন কুমিল্লা গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ কুমিল্লায় পৃথক দু’টি লাশ উদ্ধার কুমিল্লা বুড়িচংয়ে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি ঘর পুড়ে ছাই; ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় ডোবার পানিতে পরে মামা ভাগনের মৃত্যু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে ৩৬ টাকা দরে বোরো ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু

জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি (পর্ব-৯)

  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২
  • ২২১ বার পড়া হয়েছে

৮। মারাত্মক ঠান্ডার আযাবঃ
আগুন যেভাবে মানুষের শরীরকে জ্বালিয়ে দেয়, তেমনি ভাবে মারাত্তক ঠান্ডাও মানুষের শরীরকে
ঢিলা করে দেয় । তাই জাহান্নামে অত্যাধিক ঠান্ডার আযাবও থাকবে। জাহান্নামের ঐ স্তরটির নাম
হবে ‘যামহারীর’ যামহারীরে কত কঠিন ঠান্ডা হবে তার জ্ঞান তো একমাত্র সর্বজ্ঞ ও সম্যক অবহিত মহান আল্লাহ্ ই ভাল জানেন। কিন্তু এ ঠান্ডা যেহেতু শাস্তি দেয়ার জন্য হবে,অতএব তা তো অবশ্যই এ ঠান্ডা থেকে কয়েক গুণ বেশি হবে। এ এদুনিয়ায় যে কোন ঠান্ডার মৌসুমে ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে হয়ে থাকে। যা থেকে আত্ম রক্ষা করার জন্য গরম পোশাক কম্বল,লেপ,হিটার,আঙ্গার ধানিকা, গরম গরম খানা পিনা, আরো কত কি, এর পরও মানুষের অস্বাভাবিক অসাবধানতার ফলে,সাথে সাথেই মানুষ কোন না কোন সমস্যায় পড়ে যায়। উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যতীত মানুষকে যদি পোশাকহীন পৃথিবীর ঠান্ডায় থাকতে হয়, তাহলে তাও এক প্রকার কঠিন আযাব হবে। অথচ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ“পৃথিবীর ঠান্ডা জাহান্নামের শ্বাস ত্যাগের কারণে হয়ে থাকে”। (বোখারী)
এ থেকে অনুমান করা যেতে পারে যে,শুধু জাহান্নামের অভ্যান্তরিন শ্বাস থেকে সৃষ্ট ঠান্ডা যদি
মানুষের জন্য অসয্য হয়,তাহলে জাহান্নামের অভ্যান্তরিন ঠান্ডার স্তর ‘যামহারীরে’ মানুষের কি
অবস্থা হবে?
আল্লাহ্ মানুষকে অত্যন্ত নরম ও মোলয়েম করে তৈরী করেছেন। এত নরম ও মোলায়েম যে শুধু
৩৭ ডিগ্রী সেন্ট্রি গ্রেডের মাঝে সে সুস্থ্য থাকতে পারে। এর চেয়ে কম বা বেশি উভয় তাপ মাত্রাই
অসুস্থ্যতার লক্ষণ । যদি শরীরের তাপ মাত্রা ৩৫ এর কম হয়ে ২৬ ডিগ্রী সেন্ট্রি গ্রেডে পর্যন্ত পৌঁছে যায়,তাহলে তার মৃত্যু হয়ে যাবে। আর যদি এ তাপ মাত্রা প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে শরীরের কোন অংশে ৬.৭৫ ডিগ্রী সেন্টি গ্রেড (বা ২০ডিগ্রী ফারন হাইট) পর্যন্ত পৌঁছে যায়,তা হলে শরীরের ঐ অংশটি ঠান্ডার কারণে ঢিলা হয়ে বা পচে সাথে সাথে পৃথক হয়ে যায়, যাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে “FROST BITE”
বলে ৷ অনুমান করা যাক যে, যামহারীরে যদি এতটুকু ঠান্ডা থাকে যে, শরীরের অভ্যান্তরিন
তাপমাত্রা ৬.৭ ডিগ্রী সেন্টি গ্রেড (বা ২০ ডিগ্রি ফারান হাইট) পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তা হলে ঐ
আযাবের অবস্থা এ হবে যে, জীবিত মানুষের শরীর ঠান্ডার প্রচন্ডতায় বালুর মত দানা দানা হয়ে,অণুতে পরিণত হবে। অতপর তাকে নুতন করে শরীর দেয়া হবে। যতক্ষণ সে যামহারীরে থাকবে ততক্ষণ সে ঐ আযাবে নিমজ্জিত থাকবে। এ ভাগ শুধু সাইন্স ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেখানো হল। যখন একথা স্পষ্ট যে,জাহান্নামের আগুনের ন্যায় যামহারীরের ঠান্ডাও পৃথিবীর ঠান্ডার চেয়ে কয়েক গুন বেশি কঠিন হবে। যামহারীরের বাস্তব ঠান্ডার শাস্তি যথাযথ অবস্থা কি হবে,তা হয়ত আমরা এ দুনিয়াতে কল্পনাও করতে পারব না। কিন্তু এবিষয়ে মোটেও সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে, জাহান্নামের আগুন হোক আর যামহারীরের ঠান্ডা, উভয় অবস্থায়ই কাফের জীবিত থাকার চেয়ে মৃত্যুকে প্রাধান্য দিবে। আর বার বার মৃত্যু কামনা করবে। ونادوا يا مالك ليقض علينا ريك قال
অর্থ :“তারা চিৎকার করে বলবেঃহে মালিক (জাহান্নামের রক্ষক)তোমার প্রতিপালক আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিন”। উত্তরে বলা হবেঃ
إنكم ماكثون (سورة الزخرف-۷۷)
“তোমরা তো এভাবেই থাকবে”। (সুরা যুমার-৭৭)
আল্লাহ সমস্ত মুসলমানদের কে স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহে যামহারীরের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং স্বীয় বান্দাদের প্রতি রহম ও অনুগ্রহ পরায়ন।
৯ – কিছু অজানা আযাবঃ
কোরআ’ন ও হাদীসে আগুন ব্যতীত অন্যান্য বহু প্রকার আযাবের যেখানে সাধারণ বর্ণনা হয়েছে,
সেখানে কোন কোন গোনার বিশেষ বিশেষ আযাবের উল্লেখও করা হয়েছে। কিন্তু এর সাথে
সাথে আল্লাহ্ তা’লা একথাও উল্লেখ করেছেন
অর্থ :“ আরো আছে এরূপ বিভিন্ন ধরণের শাস্তি”। (সূরা সোয়াদ – ৫৮) আবার কোথাও শুধু
অর্থঃ“ বেদনা দায়ক আযাব”। আবার কোথাও
“প্রকন্ড আযাব” আবার কোথাও কঠিন আযাব” বলেই শেষ করা হয়েছে।
“এরূপ বিভিন্ন ধরণের শাস্তি”। “বেদনা দায়ক আযাব” “প্রকন্ড আযাব” কঠিন আযাব” ইত্যাদি কি ধরণের হবে তার সঠিক জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্ই ভাল রাখেন। মনে হচ্ছে যে,জেলখানায় যেমন সন্ত্রাসীদের শাস্তি সুনিদৃষ্ট থাকে,কিন্তু এর পরও কিছু কিছু বড় বড় সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে,অফিসাররা কোন কোন সময় শুধু বলে দেয় যে, অমুক সন্ত্রাসীকে ইচ্ছামত শিক্ষা দাও। আর জল্লাদ ভাল করেই জানে যে,এ নির্দেশের মাধ্যমে অফিসারদের উদ্দেশ্য কি এবং এধরণের সন্ত্রাসীদেরকে শিক্ষা দেয়ার কি ব্যবস্থা আছে। এমনিভাবে আল্লাহ্ কাফেরদের বড় বড় নেতাদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্য, শুধু এতটুকু বলেছেন যে, অমুক অমুক মোজরেমকে বেদনা দায়ক শাস্তি দেয়া হবে। জাহান্নামের প্রহরী ভাল করে জানে যে,বেদনাদায়ক শাস্তি দেয়ার কি কি পদ্ধতি আছে। আর যে মোজরেম প্রকন্ড আযাবের হকদার, তাকে প্রকন্ড আযাব কিভাবে দিতে হবে,তাও তার জানা আছে। (এব্যাপারে আল্লাহ্ ই ভাল জানেন)।
এ হল ঐ জাহান্নাম এবং তার শাস্তি যা থেকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহ্ ও রাসূল ভয় প্রদর্শন
কারী রূপে প্রেরিত হয়েছিলেন। আর তিনি লোকদেরকে ভয় প্রদর্শন করতে কোন প্রকার ত্রুটি
করেন নাই । লোকদেরকে বারবার সতর্ক করেছেন যে,(اتقوا النار ولو بشق تمرة فمن لم يجد فبكلمة طيبة )
অর্থঃ“একটি খেজুরের (সামান্য) অংশ দান করার বিনিময়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ। আর
যার পক্ষে এতটুকুও সম্ভব নয়,সে যেন ভাল কথা বলার মাধ্যমে তা থেকে বাঁচে।” (মুসলিম)
অর্থাৎ : জাহান্নাম থেকে বাঁচা এতই গুরুত্ব পূর্ণ যে, যার নিকট দান করার মত কোন কিছুই
নেই,সে যেন একটি খেজুরের একটু অংশ দান করে, জাহান্নাম থেকে নিজেক বাঁচায়। আর যার
পক্ষে তাও সম্ভব নয়, সে যেন ভাল কথা বলার মাধ্যমে নিজেকে তা থেকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা
করে।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বাণীর শেষ অংশটি “যার নিকট খেজুরের একটি
টুকরাও নেই ” একথা প্রমাণ করছে যে,তিনি তার উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য কত
আগ্রহী ও সু কামনা করতেন। আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)থেকে বর্ণিত,তিনি
বলেনঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার
দূয়া এমনভাবে শিখাতেন,যেমন কোরআ’ন মাজীদের সূরা শিখাতেন। (নাসায়ী)
মালেক বিন দিনার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃযদি আমার নিকট কোন
সাহায্যকারী থাকত তাহলে আমি তাকে সমগ্র পৃথিবীতে আহ্বানকারী রূপে পাঠাতাম যে,সে
ঘোষণা করবে যে,হে লোকেরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচ। হে লোকেরা জাহান্নামের আগুন
থেকে বাঁচ। সমগ্র পৃথিবীতে না হোক,অন্তত এটুকুতো আমরা প্রত্যেকে করতে পারি যে,নিজের
সন্তান-সন্ততিদেরকে জাহান্নাম থেকে সতর্ক করি। নিজের আত্মীয় স্বজনদেরকে জাহান্নাম থেকে
সতর্ক করি। নিজের বন্ধু-বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী দেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে সতর্ক করি।
যে হে লোকেরা খেজুরের একটি টুকরা দান করার মাধ্যমে হলেও, জাহান্নাম থেকে বাঁচ, আর তা
সম্ভব না হলে ভাল কথার মাধ্যমে তা থেকে বাঁচ । (মুসলিম)। —————চলবে।
তথ্য সূত্র : জাহান্নামের বর্ণনা।
#প্রভাত সংবাদ /র আ/৩৬

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন