1. provatsangbad@gmail.com : প্রভাত সংবাদ : প্রভাত সংবাদ
  2. mdjoy.jnu@gmail.com : dainikjoybarta.online : Shah Zoy
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
কুমিল্লায় ২৪ ঘন্টায় ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে ঐকতান পরিবার’র রবীন্দ্র জয়ন্তী স্মরণানুষ্ঠান কুমিল্লায় পশুরহাটের ইজারাদারদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মতবিনিময় সভা কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্র সহ কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেফতার কুমিলা বুড়িচংয়ে খামার ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণ বায়োগ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন কুমিল্লা গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ কুমিল্লায় পৃথক দু’টি লাশ উদ্ধার কুমিল্লা বুড়িচংয়ে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি ঘর পুড়ে ছাই; ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় ডোবার পানিতে পরে মামা ভাগনের মৃত্যু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে ৩৬ টাকা দরে বোরো ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু

শনিবার কুমিল্লার বেলায়েতের শাহেনশাহ্ গাউছুল আজম সৈয়দ আলতাফ আলী (রঃ)৭০ তম বার্ষিক ওরুস মাহফিল

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২১৪ বার পড়া হয়েছে

মো. শাহ আলম শফি।। কুমিল্লা শহরতলী দৌলতপুর গ্রামে ছিলেন বেলায়াতের শাহেনশাহ্ গাউছুল আজম শাহ্ সূফী হযরত মাওলানা সৈয়দ আলতাফ আলী (রঃ)। তিনি খড়ম পায়ে পানির উপর দিয়ে হাটতেন এবং তেল ছাড়া বাতি জ্বালিয়ে কেরামতি প্রকাশ করেন। তাঁর নাম খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী পুরুষ তাঁর কাছে বায়ত গ্রহন করেন।

জানা যায়, দৌলতপুরী আলতাফ আলী (রঃ)-এর পূর্ব পুরুষগণ আরব দেশ হতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কলমক্ষেত্র নামক স্থান হয়ে কুমিল্লা শহরতলীর জগনাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে স্থায়ী ভাবে বসবাস স্থাপন করেন।
এদিকে আলতাফ আলী (রঃ)-এর বেলায়াতের গুরু গাউছুল আযম সৈয়দ রজব আলী (রঃ) শাকরাপুরী কুমিল্লা শহরে পড়ালেখা করাকালে বাজগড্ডার অলি আহম্মদ চৌধুরীর বাড়িতে থাকতেন। নামাজের সময় মসজিদে গেলে দৌলতপুরী আলতাফ আলীর (রঃ,) এর সাথে পরিচয় হয়। সে সময় আলতাফ আলী মসজিদে
আযান দিতেন, তাঁর আযানের সুমধুর আওয়াজ মন মুগ্ধকর ছিল। ফলে শাকরাপুরী সৈয়দ রজব আলী (রঃ) বেলায়েতী শক্তিতে বলিয়ান হওয়ায় তাহার কামেলিয়াত, কারামত, জটিল রোগের
চিকিৎসা, আরোগ্য লাভ প্রভৃত গুনাবলী প্রভাতের সূর্য রশ্মির ন্যায় চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লো। হাজার হাজার লোক দলে দলে হাজত পুরনের জন্য তাঁর সান্নিধ্যে এসে কামিয়াব হতে লাগলেন।শাকরাপুরীর সৈয়দ রজব আলী (রঃ) এর নাম,যশ, ও খ্যাতি কুমিল্লা শহরে ছড়িয়ে পড়লো।

হযরত আলতাব আলী (রঃ) ছিলেন নিঃসন্তান, তিনি সর্বক্ষণ বিপন্ন মনে পরকালের চিন্তায় বিভোর থাকতেন। শেষে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, পীরে কামেল গাউছুল আযম শাকরাপুরী (রঃ) এর স্মরনাপন্ন হতে হবে। যে কথা সে কাজ, হযরত আলতাব আলী (রঃ) গাউছুল আযম শাকরাপুরী (রঃ) এর নিকট বায়াত গ্রহন করেন। ত্বরিকার নিয়ম অনুযায়ী ওযিফা, নামাজ, রোজা পাশাপাশি যিকির আজকার, মোরাকাবা ত্বরিকার বিধি বিধান ধর্ম কর্ম, শিক্ষা দিয়ে তাকে বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ
দিলেন।
হযরত দৌলতপুরী (রঃ) সকাল বেলা পায়ে হেটে শাকরাপুর দরবারে আসতেন আবার বিকেলে দৌলতপুর নিজের গ্রামে ফিরে যেতেন। একদিন আষাঢ় মাসে মুর্শিদ কেবলা সৈয়দ রজব আলী(রঃ) শাকরাপুরী শিষ্য আলতাফ আলী দৌলতপুরীর বাড়িতে হাজির হলেন। মুর্শিদ কেবলা তাকে বললেন আমাকে টমেটুর টক খাওয়াইতে হবে।
ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন সময় কোথায়ও হিমাগার ছিলোনা,এ সময় টমেটো কোথায় পাবে? এ নিয়ে শিষ্য চিন্তায় পড়ে গেলেন, ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখেন, একজন সব্জি বিক্রতা তরকারি বিক্রি করছে, তখন সে সব্জি বিক্রেতার নিকট গিয়ে দেখেন তার ঝুড়িতে পাঁকা টমেটু, শিষ্য টমেটু কিনে গুরুকে খাওয়ালেন। যেমন গুরু তেমন শিষ্য।

হযরত শাকরাপুরী শিষ্যের আধ্যাত্মিক জ্ঞান, আমল, তারঁ আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে খেলাফত প্রদান করলেন। তাঁকে নিজ বাড়ি দৌলতপুরে গদীনশীন হয়ে ত্বরিকা প্রচার- প্রসার ও বায়াতের হুকুম দিলেন।
হযরত গাউছুল আযম সৈয়দ রজব আলী (র:) তাকে অমূল্য ধন খেলাফত দান করেন এবং নেয়ামত স্বরূপ ১২ই রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) প্রতি বছর পালন করার হুকুম দিলেন। দৌলতপুরী (রঃ) তখন মাহফিল পরিচালনা করে ব্যয় বহন করার সামর্থ ছিলোনা। মুর্শিদ কেবলা শাকরাপুরীর নিকট সাহায্য
কামনা করলেন। হযরত শাকরাপুরী (রঃ) দয়া পরবশ হয়ে শাকরাপুর দরবার শরীফ হতে হাড়ি পাতিল, চাউল, ডাল, লাকড়ি, বাবুর্চিসহ যাবতীয় দ্রব্যাদি দৌলতপুর নিয়ে গিয়ে শাকরাপুরী (রঃ) স্বয়ং নিজে উপস্থিত থেকে ১২ই রবিউল
আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) মাহফিল শুভ উদ্বোদন করেন।
কুমিল্লা শহরের আশে পাশে শাকরাপুরীর যত ভক্ত মুরিদান আছে তাদের কে আদেশ করলেন তোমরা সকলে দৌলতপুরীর খেদমতে নিয়োজিত থাকবে। তোমরা তাঁর হুকুম তামিল করিবে। শাকরাপুর দরবার থেকে যে নেয়ামত পাওয়া যাবে
হযরত আলতাফ আলী (র:) এর দরবার থেকে তা পাবে। শাকরাপুর দরবার শরীফের প্রসিদ্ধ খলিফা শাহসূফী আমজাদ আলী খাঁ অরন্যপুর ও শাহসূফী বশির উদ্দিন ফকির পূর্বহারা বুড়িচং আজীবন দৌলতপুরী (র:) এর খেদমতে নিয়োজিত
ছিলেন। প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বর তার আস্তানায় হাজার হাজার ভক্ত আশেকানদের মিলন মেলা ঘটে। তার আস্তানায় খতমে কোরআন, দুরূদ ও মিলাদ শরীফের পর, সামা- কাওয়াল ঢোল বাধ্য যন্ত্রের তালে তালে স্বর ও সুরে হৃদয়ের স্পন্দনে রাতভর যিকির আযকার, হালকা জ্যবা করে ওরশ মাহফিল পালন করে থাকেন।
ভক্তবৃন্দরা দূর দূরান্ত থেকে গরু মহিষ চাল-ডাল নিয়ে নজরানা হিসাবে দরবার শরীফে আসেন। আশেকানদের প্রাণ প্রিয় মুর্শিদ কেবলার বিরহ বেদনা আর্তনাদে আহাজারী সামা কাওয়াল স্বরে সুরে প্রকাশ পায়। অনুরাগে উল্ল্যাসিত হয়ে প্রেম
সুধা প্রাণে নিমগ্ন থাকেন, মহাসমারোহে এই পবিত্র ওরশ শরীফ উপলক্ষে হাজার হাজার লোক সমাগম হয়ে থাকে। তাঁর কেরামতি ও বুযুর্গি প্রকাশ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ও ভারতে অনেক খলিফা রেখে গেছেন। তাঁর খলিফাবৃন্দের মধ্যে দৌলতচাঁন (মধুপুরী) প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। প্রায় ২১ জন খলিফা ও লক্ষ লক্ষ আশেক ভক্ত রেখে ১৯৫২ সালে ৩১ ডিসেম্বর তিনি ওফাৎ হন।
কয়েকজন খলিফার মধ্যে অন্যতম ছিলেন,
(১) সূফী মোঃ দৌলতশাহ (কুঃ), মাসিকরা, দেবীদ্বার, কুমিল্লা। (২) সূফী টুকু মিয়া ফকির (কুঃ), নোয়াগাঁও, গৌরীপুর, কুমিল্লা। (৩) সূফী সবরত আলী মাষ্টার (কুঃ), মির্জানগর, কালিবাহার, কুমিল্লা। (৪) সূফী ইউসুফ আলী, আবদুল্লাপুর (কুঃ), দেবীদ্বার কুমিল্লা। (৫) সূফী আয়াত আলী মাষ্টার (কুঃ), নাগেরকান্দি, মুরাদনগর, কুমিল্লা। (৬) সূফী দোরন শাহ (কুঃ), রহিমপুর, মুরাদনগর, কুমিল্লা।(৭) সূফী আবিদ আলী ফকির (কুঃ), নারুউড়া, বুড়িচং, কুমিল্লা। (৮) সূফী তৈয়ব শাহ (কুঃ), কংসনগর, ফুলসো, দ্বেবীদ্বার, কুমিল্লা।

তাঁর সন্তানাদি না থাকায় বোনের ঘরের ভাগিনারা দরবার পরিচালনা করতেন। ওনার ৩ বোন ছিলেন সৈয়দা এলনজান বিবি, সৈয়দা গোলাপজান বিবি,সৈয়দা টুক্কুনী বিবি। ৩ বোনের ঘরের ভাগিনারা দরবার পরিচালনা করে আসছিলেন। বর্তমানে ওনার ভাগিনার ঘরের নাতিরা দরবার পরিচালনা করছেন। ফুল মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, ও মোঃ ইসমাইল।

আজ শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) হযরত মাওলানা সৈয়দ আলতাফ আলী (রঃ)-এর ৭০ তম বার্ষিক ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে তিন জনের পক্ষেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে রয়েছে ৩০ ডিসেম্বর রাতে রওজা মোবারক গোসল দেয়া, ৩১ ডিসেম্বর সকালে কোরআন খতম,বাদ এশা মিলাদ শরীফ, হালকায়ে জিকির ও ছামা মাহফিল। বাদ ফজর আখেরী মোনাজাত এবং তাবারুক বিতরন। ২ জানুয়ারি’২০২৩ বাদ মাগরিব ফাতেহা শরীফ।
#

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন