প্রভাত সংবাদ প্রতিবেদক।। কুমিল্লার প্রধান নদী গোমতীর চরাঞ্চলে এস্কেভেটর দিয়ে অবাধে মাটি কাটছে মাটিখেকোদের সিন্ডিকেট চক্র । এতে একসময়ের জেলার শস্যভান্ডার খ্যাত গোমতীর চরের শত শত একর বর্তমানে চাষাবাদ শুন্য বা পরিত্যক্ত। প্রতিবছর উজান থেকে আসা পলিতে উর্বর গোমতীর চরে বছরব্যাপী ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখতো কৃষক। সাম্প্রতিক সময়ে মাটি খেকোরা এতটাই বেপরোয়া যে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবাধে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গোমতীর চরাঞ্চল থেকে রাতভর মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ মাটি মহাসড়ক পথে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। খোলা ডাম্পট্রাকে মাইলের পর মাইল পথ অতিক্রম করায় বিবর্ণ হচ্ছে মহাসড়ক,বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রতিরক্ষা বাঁধ,বায়ু ও শব্দ দূষনে নদীপাড়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে।
সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, জেলার প্রধান নদী গোমতী । ভারতের ত্রিপুরা থেকে উৎপন্ন নদীটি কটকবাজার সীমান্ত হয়ে কুমিল্লায় প্রবেশ করে কুমিল্লা সদর , বুড়িচং, ব্রাহ্মনপাড়া,দেবিদ্বার, মুরাদনগর,তিতাস হয়ে দাউদকান্দির সাপটায় মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়। নদীর দু’তীরে রয়েছে বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল। প্রতিবছর উজান থেকে আসা পালির সাথে বিপুল পরিমান পলি বহন করে নদীর দু’তীরের চরাঞ্চলকে উর্বর করে। আর সেই চরে সারা বছর চাষাবাদ করে ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত সময় পার করার স্বপ্ন দেখে কৃষক। এই চরে ধান, পাট, গম, সরিষা, শীতকালীন বিভিন্ন শাকসব্জি,আখ,বারো মাসী মুলা উৎপাদন হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে , সাম্প্রতিক সময়ে মাটি খেকোরা এতটাই বেপরোয়া যে, রাতের আধাঁরে তারা এস্কেভেটর দিয়ে অবাধে মাটি কেটে ডাম্প ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রতিবাদ করলে হামলা-মামলাসহ নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি ভারি ডাম্পট্রাকযোগে মাটি পরিবহনের ফলে গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধও বিভিন্নস্থানে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এধবস্থায় কৃষকদের স্বার্থ ,প্রতিরক্ষা বাঁধ রক্ষায় কুমিল্লা জেলা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন গোমতীর চরাঞ্চল থেকে মাটি কাটা ও নদী থেকে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এতে মাটি খেকোরা দিনে মাটি কাটা বন্ধ রাখলেও সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত মাটি কাটা অব্যাহত রাখছে।
এতে চরাঞ্চল যেমন কৃষক শুন্য হয়ে পড়ছে,তেমনি প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকীর মুখে,পাশাপাশি শব্দ ও বায়ূদূষনে চরম দুর্ভোগ মানুষের। এবিষয়ে নদীর আমতলী ও বাগিলারা এলাকার একাধিক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মাটি কাটছে,সেই মাটি সড়ক-মহাসড়ক হয়ে বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দিচ্ছে সিন্ডিকেটের লোকজন সেটা প্রশাসন দেখছে। কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে নিজেরা প্রতিবাদ করতে সাহস পান না হয়রানী হওয়ার ভয়ে।
#