1. provatsangbad@gmail.com : প্রভাত সংবাদ : প্রভাত সংবাদ
  2. mdjoy.jnu@gmail.com : dainikjoybarta.online : Shah Zoy
রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য জাতীয় নির্বাচন আগে দিতে হবে : কুমিল্লায় রুহুল কবির রিজভী কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ ইউপি সদস্য গ্রেফতার কুমিল্লায় ৭০ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেফতার কুমিল্লায় অপারেশন ডেভিল হান্ট, ৬ দিনে গ্রেফতার ৪৫ জন কুমিল্লা দাউদকান্দিতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার-২ কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার্থী আতিক হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে স্বর্ণ দোকানে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনায় এক ডাকাত র‌্যাবের হাতে আটক ক্ষমা ও মুক্তির বরকতময় রাত বরাত কুমিল্লায় বিজিবি অভিযানে ৮৭ লাখ টাকার ভারতীয় আতশবাজি ও কিসমিস জব্দ কুমিল্লা দাউদকান্দিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এসিল্যান্ডের উপর হামলা,পুলিশসহ আহত ২ জন

কুমিল্লার ১৪টি উপজেলায় ৭ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি,নৌযানের অভাবে উদ্ধার কাজ ব্যাহত, পৌঁছানো যাচ্ছেনা ত্রাণসামগ্রী

  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৭৫ বার পড়া হয়েছে

শিশির সমরাট।। কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪ টি উপজেলার ১১৮ টি ইউনিয়নের ৭ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। শনিবার রাতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। নৌযানের ব্যাবস্থা না থাকায় দুর্গম এলাকায় এখনো পৌঁছানো যাচ্ছেনা ত্রান-সাহায্য, উদ্ধার করা যায়নি বহু মানুষ। আবার কোথাও কোথাও দেখা যায় পানিতে ভাসছে লাশ। উদ্ধারের নেই কোন ব্যাবস্থা।

বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা দেখলে মনে হয় এ যেনো আরেকটি গোমতী নদী। গোমতীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ৮০ সেন্টিমিটার কমলেও বাঁধ ভাঙ্গার ৩৬ ঘন্টা পরও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে এখনো প্রবাহিত হচ্ছে। শহরতলীর গোমতী প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকার মানুষজন এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, তারা রাত জেগে হাজার হাজার মানুষ গোমতীর বাঁধ পাহাড়া দিচ্ছেন। তাদের ধারণা যে কুমিল্লা শহরকে বাঁচানোর জন্য হয়তো প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বিপরীত পাশের বাঁধ ভেঙ্গে দিতে পারে। সে কারনে গোমতী পাড়ের বাসিন্দারা ভারতীয় সীমান্তের গোলাবাড়ি থেকে শুরু করে বুড়িচং এর বাঁধ ভাঙ্গা এরিয়ার আগ পর্যন্ত সারা রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে থাকে।

বুড়িচংয়ে বুড়বুড়িয়া গোমতীর বাঁধ ভাঙ্গার স্থান দিয়ে তিব্র গতিতে পানি প্রবেশ করায় এখনো নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। পাশের উপজেলা ব্রাহ্মণপাড়াতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই উপজেলাতেও নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন ইউনিয়ন। উপজেলার দুর্গম এলাকাতে এখনো পানিবন্দি হয়ে অনেকে আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধার কর্মীরা শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছার চেষ্টা করে কেউ যেতে পারছেন, কেউ ফেরত আসছেন। কারণ রাস্তা ডুবে যাওয়া ও নৌকা না থাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি আটকাপড়াদের খোঁজখবরও নেওয়া যাচ্ছে না।

বুড়িচংয়ে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে যারাই চলাচল সুবিধা পর্যন্ত যেতে পারছেন সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্রে কেবল খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিতে পারছেন। কিন্তু নৌকা সমস্যার কারণে ভেতরে যেসব মানুষ বিভিন্ন স্কুল, মাদরাসা বা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তারা কাপড়চোপড়, খাবার না পেয়ে হাহাকার করছেন। সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানিরও সংকট রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ওইসব মানুষরা সন্ধ্যা হলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, ‘কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টি বন্যা-কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১১৮টি ইউনিয়নের ৭ লাখের বেশি মানুষ। আমরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। সহায়তা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ২শ ২৭ টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান জেলার সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার। মেডিকেল টিম উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘দুর্গত এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যা-কবলিত মানুষের জন্য শুকনা খাবার, স্যালাইন ও ওষুধ মজুত আছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।’
প্রসঙ্গত, টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সম্প্রতি কুমিল্লাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া এলাকা দিয়ে ভেঙে যায় গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ। তারপর থেকে প্লাবিত হয় বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়ার অন্তত ৫০টি গ্রাম।

অপর দিকে শনিবার রাতে নতুন করে ভেঙ্গেছে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় ঘুংঘুর নদীর বাঁধ। গোমতী ও ঘুংঘুর দুই নদীর পানির দুই দিকের চাপে পরে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার এখন পর্যন্ত ৪টি ইউনিয়নের ২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে মালাপাড়া, সাহেবাবাদ, শশীদল, নাইঘর, নোয়াপাড়া, কল্পবাস, ধান্যদৌল, ডগ্রাপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া সদর, নাগাইশ, বড় দুশিয়া ও চান্দলার গ্রামের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। উপজেলার সব স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ সন্ধ্যা থেকে পানিবন্দি ছিলেন। এ অবস্থায় আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছেন এসব মানুষ।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, সকাল পর্যন্ত ভালোই ছিল, বিকালে খবর পাই বিভিন্ন এলাকায় পানি আসছে। সন্ধ্যায় প্রবল বেগে পানি ঢুকে ২৩টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমন্বয় করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি৷ এ ছাড়া ঢাকা থেকে ড্রাম এনে উদ্ধারকাজে সহযোগিতার জন্য ভেলা তৈরি করেছি। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন, তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা পানিবন্দি অবস্থায় আছেন, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

এদিকে শনিবার নিজ আচরণের জন্য দু:খ প্রকাশ করেছেন বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘এত মানুষ আসে টিকটক করতে, ভিডিও করতে। কতবার ডাক দেওয়া যায়। এসব মানুষের কারণে উপজেলা প্রশাসনের কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’ তিনি অনুরোধ করেন, যাঁরা ত্রাণ দিতে আসবেন, তাঁরা যেন কষ্ট করে হলেও নৌকার ব্যবস্থা করে আসেন। তাহলে একদম দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।’
#

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন