1. provatsangbad@gmail.com : প্রভাত সংবাদ : প্রভাত সংবাদ
  2. mdjoy.jnu@gmail.com : dainikjoybarta.online : Shah Zoy
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০১:৫২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে ঐকতান পরিবার’র রবীন্দ্র জয়ন্তী স্মরণানুষ্ঠান কুমিল্লায় পশুরহাটের ইজারাদারদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মতবিনিময় সভা কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্র সহ কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেফতার কুমিলা বুড়িচংয়ে খামার ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণ বায়োগ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন কুমিল্লা গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ কুমিল্লায় পৃথক দু’টি লাশ উদ্ধার কুমিল্লা বুড়িচংয়ে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি ঘর পুড়ে ছাই; ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় ডোবার পানিতে পরে মামা ভাগনের মৃত্যু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে ৩৬ টাকা দরে বোরো ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু কুমিল্লা বুড়িচংয়ে আ’লীগ নেতা সাহেব আলী চেয়ারম্যান গ্রেফতার

শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ মুজিযা, মিরাজ ও নামাজ

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।। ইসলামের ইতিহাসে পবিত্র মিরাজের রাত ও ঘটনাসমূহ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যময়।২৭ রজবের রাতকে শবে মিরাজ বলা হয়। এ রাতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহর কুদরতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইলে এরশাদ হয়েছে- পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি বান্দাকে তাঁর নিদর্শনগুলো দেখানোর জন্য রাত্রিকালে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ পবিত্র, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
পবিত্র মিরাজের যাত্রা শুরু হয় মসজিদে হারাম থেকে। হযরত জিব্রাইল (আ.) বোরাকে করে রাসুলে পাক (সা.)-কে বায়তুল মোকাদ্দাস নিয়ে যান। সেখানে তিনি দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। ওই নামাজে নবীজি (সা.) সব নবীর ইমামতি করেন। তারপর তিনি বোরাকে চড়ে ঊর্ধ্বে গমন করতে থাকেন। একের পর এক আসমান অতিক্রম করেন। রাস্তায় হযরত ণমুসা (আ.)-সহ বেশ কয়েকজন নবী-রাসুলের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। সপ্তম আসমানের পর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বায়তুল মামুর পরিদর্শন করানো হয়। সেখানে রাসুলে পাক (সা.) স্বচক্ষে জান্নাত ও জাহান্নাম অবলোকন করেন। সেখানে অনেক পাপের শাস্তি প্রত্যক্ষ করেছেন। সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ, আরশ-কুরসি প্রভৃতি সামনাসামনি সশরীরে দেখা, সর্বোপরি মহান রবের সঙ্গে পবিত্র দিদার লাভসহ অবলোকন করেছেন সৃষ্টিজগতের অপার রহস্য।
কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, মিরাজের রাতে রাসুলে পাক (সা.) আল্লাহ তায়ালার এতটা কাছাকাছি গিয়েছিলেন যে, দু’জনের মধ্যখানে মাত্র এক ধনুক পরিমাণ ব্যবধান ছিল। এখানে রাসুলে পাক (সা.)-এর উম্মতের ওপর ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। ফিরে আসার সময় হযরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তিনি নবীজিকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার রব আপনার উম্মতের ওপর কী ফরজ করেছেন? নবীজি বললেন, ৫০ ওয়াক্ত নামাজ। তিনি বললেন, আপনি মহান রবের কাছে ফিরে যান এবং আরও কমিয়ে আনার আবেদন করুন। এতটুকু পালনের সাধ্য আপনার উম্মতের নেই। নবীজি আবার মহান রবের কাছে ফিরে গেলেন এবং বললেন, রাব্বুল আলামিন! আমার উম্মতের জন্য নামাজ আরও কমিয়ে দিন। আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়ে দিলেন। ফিরে আসার সময় ৪৫ ওয়াক্ত নামাজের কথা হযরত যমুসা (আ.)-কে জানালে তিনি বললেন, আপনার উম্মতের এতটুকু পালন করার সামর্থ্য নেই। অতএব আরও হ্রাস করার আবেদন করুন। নবীজি বললেন, আমি এমনিভাবে বারবার আপন রব ও মুসা (আ.)-এর কাছে আসা-যাওয়া করতে থাকলাম। আর প্রতিবারই পাঁচ-পাঁচ করে কমতে থাকল। এভাবে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উম্মতে মুহাম্মদির ওপর ফরজ করেন, যা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উম্মতে মুহাম্মদির জন্য উপহার বিশেষ। প্রিয়নবী (সা.) যে আল্লাহ দতায়ালার কাছে কতখানি মর্যাদার অধিকারী, তা এ ঘটনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। তাঁকে এমন মর্যাদা দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবীকে দান করা হয়নি। এ ঘটনার ফলে মুমিনের ঈমান মজবুত হয় এবং হৃদয়ে প্রিয় নবী (সা.)-এর ভালোবাসা সুগভীর হয়।
রাসুলে পাক (সা.)-এর মিরাজ কোরআন-হাদিস ও ইজমায়ে উম্মতের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত। মিরাজ সত্য- এ বিশ্বাস পোষণ করা প্রত্যেক মুমিনের ওপর ফরজ। মিরাজের রাতে নবীজির বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত সফরের কথা সুরা বনি ইসরাইলের শুরুতে এবং ঊর্ধ্ব জগতের সফরের কথা সুরা নাজমের ১৩ থেকে ১৮ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। মিরাজ তথা ঊর্ধ্বলোকে গমনের কথা হাদিস দ্বারা আর ইসরা তথা নৈশভ্রমণের কথা কোরআন দ্বারা প্রমাণিত।
রাসুলে পাক (সা.)-এর মিরাজ তথা ঊর্ধ্বলোকে গমনের উদ্দেশ্য ব্যাপক। মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতি জীবনে মিরাজের মতো এক মহিমান্বিত ও অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পেছনে যে কারণগুলো মুখ্য তা হলো- ১. মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাজির হওয়া, ২. ঊর্ধ্বলোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জন, ৩. অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানলাভ, ৪. ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞানার্জন, ৫. স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, ৬. পূর্ববর্তী নবী-রাসুলগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও পরিচিত হওয়া, ৭. সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ এবং ৮. সর্বোপরি এটিকে একটি অনন্য মুজিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
মিরাজের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো সর্বপ্রকার গর্ব-অহঙ্কার চূর্ণ করে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার চেষ্টা করা। কারণ, মহান আল্লাহ তায়ালার দাসত্ব বা প্রিয় বান্দা হওয়ার মধ্যেই সর্বাধিক সম্মান ও মর্যাদা নিহিত। অতএব জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর দাসত্ব করা, প্রিয় বান্দা হওয়ার চেষ্টা করা এবং সালাত (নামাজ) এর যত্নবান থাকাই হলো মিরাজের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। নবীজির মিরাজ ছিল স্বশরীরে মহান আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাৎ লাভ আর আমাদের জন্য নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য অর্জন করা। সুতরাং,মিরাজ আর সালাত(নামাজ) নবীজির শ্রেষ্ঠ মুজিযা এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাই আসুন,রাহমাতুল্লিল আলামিন হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সর্বোচ্চ ভালবাসি এবং মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের জন্য নামাজের প্রতি যত্নবান হই।
লেখক: গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ধর্ম ও সমাজ সচেতন লেখক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপস্থাপক ও সহ-সভাপতি, বুড়িচং প্রেস ক্লাব, কুমিলা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন