প্রভাত সংবাদ ডেস্ক : পবিত্র কোরআন শরীফের ৯৫ নম্বর সূরার নাম “আত্ তীন”। তীন আরবি শব্দ, যার অর্থ আঞ্জির বা ডুমুর।
হিন্দুদের ক্ষেত্রে অশ্বত্থ একটি ধর্মীয় গাছ। বাইবেলে এই ফলের কথা উল্লেখ আছে, বৌদ্ধ ধর্মেও এই গাছ পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়।
বাংলায় ডুমুর, এবং ইংরেজি: Ficus, Fig tree; বৈজ্ঞানিক নাম : Sycamore Fig, Ficus sycamore.
আফ্রিকাতে দশ বার প্রজাতির ডুমুর রয়েছে,আমাদের দেশে সাধারণত দুই ধরনের ডুমুর দেখা যায়- কাক ডুমুর এবং যজ্ঞ ডুমুর। দুটোই খাওয়া যায়। রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। আসুন জেনে নেই সে সম্পর্কেঃ-
ডুমুর কাটলে একরকমের সাদা রস বের হয়। একে বলা হয় ল্যাটেক্স । এই রস বা ল্যাটেক্স বন্ধ্যাত্বের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যাদের বন্ধ্যাত্বের কারনে সন্তানাদি হয়না তারা কয়েকটি ডুমুর কেটে পানিতে ভিজিয়ে রেখে প্রতিদিন সকাল বেলা স্বামী- স্ত্রী দুজনেই ৯০থেকে ১২০ দিন পানি সহ ডুমুর চিবিয়ে খেলে আল্লার রহমতে বন্ধ্যাত্ব দূর হয়ে সন্তান লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।
পাতলা বীর্য ঘাড় করতে উপরোক্ত নিয়মে কয়েকটি ডুমুর কেটে সাথে একটি খেজুর সহ পানিতে ভিজিয়ে প্রতিদিন সকালে ৯০দিন পর্যন্ত পানি সহ ডুমুর চিবিয়ে খেলে বীর্য ঘার হবে।
ঘন প্রস্রাব দূর করতে ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডুমুরের রস খুবই উপকারী।
প্রতিদিন ৩-৫ টি ডুমুর খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়।
মেয়েদের মাসিকের সময় বেশি রক্তস্রাব হলে কচি ডুমুরের রসের সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে উপকার হয় এবং রক্তপিত্ত সারে।
ডুমুর পিত্ত ও আমাশয় রোগে উপকারী।
রক্তপিত্ত, রক্তপড়া এবং রক্তহীনতা রোগে উপকারী।
জ্বরের পর ডুমুর রান্না করে খেলে এটি টনিকের কাজ করে।
দুধ ও চিনির সঙ্গে ডুমুরের রস খেলেও অধিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়।
আমাশয় হলে ৩ দিন কচি ডুমুরের পাতা আতপ চালের সাথে চিবিয়ে খেলে ভালো হয়।
সাদা ও রক্ত আমাশয় হলে ডুমুর গাছের ছালের ২ চামচ রস এবং মধু মিশিয়ে দুই বেলা খেলে উপকার হয়।
মাথা ঘোরা রোগে ডুমুর ভাজি করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত হেঁচকি উঠলে ডুমুরের বাইরের অংশ কেটে পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর ঐ পানি ছেঁকে এক চা চামচ করে খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়।
ডুমুর গাছের ছাল পানিসহ সিদ্ধ করে সেই পানি দ্বারা ত্বক ধৌত করলে চর্মের বিবর্ণতা এবং ক্ষত রোগে উপকার হয়।
দুধের সাথে সিদ্ধ করে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পাকে।
ক্ষুধামন্দা রোগে ১ চা চামচ কাঁচা ডুমুরের রস খাওয়ার পর সেবন করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
ডুমুর আমাদের উচ্চ কিংবা নিম্ন উভয় ধরনের রক্ত চাপকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সহায়তা করে।
ডুমুর খেলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে থাকে। এছাড়াও ত্বকে ব্রণের দাগ কিংবা যেকোনো দাগ মেশাতে ডুমুর বেশ কার্যকর। তাই যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি কিংবা ত্বকের দাগ নিয়ে চিন্তিত তারা কিন্তু ডুমুর খেতে পারেন।
ডুমুর বিভিন্ন চর্মরোগের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য ডুমুরের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের বিবর্ণতা এবং ক্ষত খুব দ্রুত সেরে যায়।এছাড়াও ত্বকের ফাঙ্গাশ জনিত যেকোনো সমস্যয় ডুমুরের সিদ্ধ পানি অনেক উপকারী।
ডূমুরের ছাল থেঁতো করে পানিতে সিদ্ধ করে এর সাথে যদি পুদিনার রস মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে আমাদের হজমশক্তি অনেক বেড়ে যায় এবং একই সাথে আমাদের পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়।
নোটঃ(ডুমুরে লোহার মাত্রা অনেক বেশি তাই কম খাওয়া ভালো)
সূত্র : বনৌষধি।
প্র/স