প্রভাত সংবাদ ডেস্ক ।। কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার গোমতীর বাঁধ ভাঙ্গনের ফলে ঘর বাড়ি হারানো বানভাসি মানুষ গুলোর অনেকেই এখনো ঘরে ফিরতে পারেনি। দেখা দিয়েছে ঘর তৈরীর মাটির সঙ্কট। বন্যায় ভেসে যাওয়া সড়ক ঠিক না হওয়া ঘরের ভিটি তৈরীতে যে মাটি দরকার তা আনতে না পারায় ভাঙ্গা ঘর বাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা। ত্রানে- সহযোগিতায় পাওয়া টিনের চালা- পিলারসহ প্রয়োজনীয় সব থাকা সত্ত্বেও ঘর নির্মান শুরু করা যাচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা জানালেন, কৃষি জমিতে এখন ফসল- সেখান থেকে মাটি কাটার অনুমতি নেই? বালি মহল থেকে ভিটির বালুর সংগ্রহ করাও অনেক খরচের ব্যাপার। আবার দূরে কোথাও হতে যে মাটি আনা হবে সে রাস্তাও নেই- পরিবহন খরচের টাকাও নেই, অন্যদিকে ভেকু বা বুলডোজারের মত ভারী যন্ত্রপাতি সহযোগিতা না পেলে ঘর নির্মান আরো ব্যয়বহুল হবে।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক বন্যায় কুমিল্লা জেলার প্রায় ৮৩ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলারই প্রায় ১৩ হাজার। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪ হাজার ১ শ ৪৩ টি ঘর। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সকল বাড়ি ঘরেরই ভিটির মাটি ভেসে গেছে প্লাবনের জলে। কাঁচা বাড়ি ঘর গুলো শুধুমাত্র টিন এবং পিলারের কাঠামো দাঁড়িয়ে থাকলেও ঘরের ভেতর তৈরি হয়েছে গভীর গর্ত। এছাড়া বুড়বুড়িয়া এলাকায় ভাঙ্গনের মুখে যেসব বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ভেসে গেছে একেবারেই সব কিছু। বাড়ির উঠোন থেকে মাটি পর্যন্ত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পানি। এই এলাকার অন্তত শতাধিক ঘরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন ঘরের ভিটি তৈরি করার মাটি পাচ্ছেন না কোথাও। রাস্তাঘাট ভাঙ্গা থাকায় অন্য কোথাও হতে মাটি আনা সম্ভব হচ্ছে না। শুধুমাত্র বুলবুলিয়া গ্রামেই অন্তত ২০টি মতো ঘর নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না মাটির অভাবে।
বুড়বুড়িয়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, আপাতত সাহায্য সহযোগিতায় আমরা যা পেয়েছি- ঘরের ভিটি তৈরি করতে না পারায় এখন আর স্থাপনা তৈরি কর সম্ভব হচ্ছে না। টিন-পালা সবকিছু থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ঘর বানাতে পারছে না শুধুমাত্র মাটির অভাবে। চারপাশে এমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট যে বাইরে থেকেও মাটি আনা সম্ভব হচ্ছে না। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মানুষ গৃহহীন রয়েছে – সরকার চাইলে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও মাটি দিয়ে সহযোগিতা করলে খুব দ্রুত ঘর বানানো সম্ভব হবে।
আবার কেউ কেউ জানান, অনেকেরই সামর্থ্য আছে আবার ঘর বাড়ি তৈরি করার। কিন্তু এখন কোথাও হতে মাটি আনার উপায় নেই। ভিটির মাটি আনতে হলে ট্রাক্টর লাগবে এবং ভেকু- বুলডোজারের মত ভারী যন্ত্রপাতির ব্যয় বহন করা কারো পক্ষেই সম্ভব না। এখন যদি কোন সংস্থার কাছে এসব যন্ত্রপাতি থাকে এবং সেই সব দিয়ে সহযোগিতা করা হয় তাহলে মানুষগুলো মাথা গোজার ব্যবস্থাটুকু করতে পারবে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার জানান, যার যার নিজস্ব উৎস থেকেই এখন মাটি সংগ্রহ করতে হবে, এছাড়া স্থানীয়ভাবে কোন বিকল্প নেই। অন্য কোন উৎস থেকে মাটি কিংবা বালু কেনা ও ব্যয় সাপেক্ষ। আর রাস্তা-ঘাট সংস্কারের জন্য উপজেলা পরিষদ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। গ্রামীণ সংযোগ সড়কগুলোর সংস্কারের জন্য এলজিইডি বরাদ্দ পেয়েছে বলে আমি জেনেছি।
#