গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।। সারা বিশ্বে মুসলিম সমাজে চলছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস “মাহে রমজান” রোজাদার মুসলমানগণ ব্যস্ত সময় পার করছেন,সাহরি, ইফতার, তারাবি, কোরআন তেলাওয়াত, নফল ইবাদত , দান- সদকা, জিকির-আযকারসহ নানাবিধ বন্দেগীর মধ্য দিয়ে। আমাদের যাদের সৌভাগ্য হয়েছে এ মাস পাওয়ার , আমরা যেন হেলায় ফেলায় সময় নষ্ট না করি। আসুন জেনে নেই রোজার দোয়া ও গুরুত্ব সম্পর্কে – ইফতার পূর্ব মুহূর্ত রোজাদার মুসলমানদের জন্য পরম আনন্দের সময়। ইফতারের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত সাহাবায়ে কেরামগন ইফতার করতেন।
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, “রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ”। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে। আরেকটি হচ্ছে যখন সে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৬)।
ইফতারের সময়ের দোয়া::
ইফতারের সময় যে দোয়া পড়তে হয়— সে সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা এসেছে। ইফতারের পরের দোয়ার কথাও উল্লেখ হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) যখন ইফতার করতেন, তখন বলতেন-
ইফতারের সময়ের দোয়া:
আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিজের মাধ্যমে ইফতার করেছি।
ইফতারের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা হলো- ইফতারে বিলম্ব করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যত দিন পর্যন্ত সময় হওয়া মাত্র ইফতার করবে, তত দিন কল্যাণের সঙ্গে থাকবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৮৫২)
ইফতারের পরের দোয়া:
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন বলতেন- “জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতাল্লাতিল উ’রুকু; ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ”।
অর্থ : ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ২৩৫৭।
ইফতারের সময় করণীয়:
* ইফতারের সময় হয়ে গেলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে ফেলা উচিত। কারণ, আল্লাহর রাসূল সা. ইফতারের সময় হওয়ার পর দেরি করতে নিষেধ করেছেন।
* ইফতারের সময় অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত না থাকা। বরকতময় খাবারে মনোযোগী হওয়া উচিত। কারণ, রোজাদারের জন্য সব থেকে আনন্দের মুর্হুত ইফতারের সময়।
* ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া করা ও ইস্তেগফার পড়া উচিত। কারণ, এ সময় দোয়া কবুলের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।
* খেজুর দিয়ে ইফতার করার চেষ্টা করা।
* ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিবের নামাজ আদায় করে তারপরে তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়া। তাতে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে।
* দ্রুত ইফতার শেষ করে নামাজে যাওয়া উচিত।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রত্যেককে সঠিকভাবে ইফতার করার ও রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক: গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ধর্ম ও সমাজ সচেতন লেখক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপস্থাপক ও চেয়ারম্যান – গাউছিয়া ইসলামিক মিশন, কুমিল্লা।
#