প্রভাত সংবাদ ডেস্ক : বগুড়ার ধুনট উপজেলার মাজবাড়ি গ্রামের আমেনা নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে একসময় স্বজনরা ধরে নেন, তিনি মারা গেছেন। তাদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে সোমবার তিনি নেপাল থেকে দেশে ফিরলেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে আমেনা খাতুনকে স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলার মো. মাসুদ আলম বলেন, বেলা একটার দিকে ভাড়া করা বিশেষ বিমানে তিনি আমেনা খাতুনকে নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এর আগে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমেনাকে বিদায় জানান সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১ সেপ্টেম্বর একটি চিঠি পাঠান নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলার। জানা যায়, আমেনার বয়স এখন ৮০ বছর। নেপালের কাঠমাণ্ডু থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে সুনসারি জেলায় প্রায় তিন মাস আগে তাঁর সন্ধান মেলে। পরে নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস তাঁকে উদ্ধার করে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়।
আমেনার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। স্বামী বেঁচে নেই। আমেনা খাতুনের বড় ছেলে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘তিন মাস আগে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানতে পারি, নেপালে মাকে পাওয়া গেছে। এরপর আমরা তাঁকে সরকারি খরচে দেশে ফেরানোর জন্য আবেদন করি। নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস তাঁকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের কারণে মায়ের দেশে ফেরা দেরি হয়। ইতিমধ্যে নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাসের সহযোগিতায় মুঠোফোনে ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি আমাদের চিনতে পেরেছেন। আমরাও তাঁকে চিনেছি।’
মাকে নিতে তাঁরা চার ভাইবোন ও স্বজনেরা ঢাকায় এসেছেন বলে জানান তিনি।
আমেনা খাতুনকে দেশে আনতে বিমানভাড়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, ৩০ মে নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাস আমেনা খাতুনের সন্ধান পায়। তিনি নেপালের সুনসারি জেলার ইনারোয়া শহরে বাসাবাড়ি ও হোটেলে কাজ করতেন। বার্ধক্যের কারণে তিনি কাজ করতে না পেরে রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে অবস্থান করছিলেন। পরে ইনারোয়া পৌরসভার কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে সুনসারি জেলা প্রশাসনের সেফ হাউসে রাখেন। নেপালের এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুকে বিষয়টি পোস্ট করেন। ওই পোস্টে তিনি আমেনাকে বাংলাদেশি বলে উল্লেখ করেন। পোস্টটির কমেন্টে নেপালে বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভের চেয়ারম্যান অভিনাভ চৌধুরী বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় বগুড়ার ধুনটে তাঁর পরিবারের খোঁজ মেলে।
মা/ক