প্রভাত সংবাদ প্রতিবেদক ।। জেলা প্রশাসকের দেয়া নৌকাটি চুরি হয়ে গেছে। একইসঙ্গে উপার্জনহীন করে দিয়ে গেছে রাশিদা বেগমকে। বিপাকে পড়েছেন খেয়া পারাপারের যাত্রীরাও। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রত্নবতী এলাকায় গোমতী নদীর খেয়া ঘাটে ঘটেছে এঘটনা।
জানা যায়, রত্নবতী খেয়া ঘাটে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে খেয়া পারাপার করে আসছেন রাশিদা বেগম। স্বামী হারুন মিয়া অসুস্থ। তাই ঘাটে বসে থাকেন। তাদের ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে। নৌকায় যাত্রী পারাপার করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছেন। সময় পেলে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে একটু বাড়তি আয়ের চেষ্টা করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাশিদা বেগম বলেন, ‘আমার একটা নৌকা ছিলো। ভাঙা, জোড়াতালি দেয়া। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে দুই মাস আগে আমাকে একটি নতুন নৌকা উপহার দেয়া হয়। নতুন নৌকা পেয়ে আমি খুব খুশি হই। অনেক যাত্রী পারাপার করতে পারতাম।’
তিনি বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় নৌকাটি ঘাটে তালাবদ্ধ করে রেখে বাড়ি যাই। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে এসে দেখি তালা ভেঙে নৌকাটি চোরে নিয়ে গেছে। এখন আমি কী করবো, কোথায় যাবো কিছুই বুঝতে পারছি না। স্বামী অসুস্থ। সে ব্রেইন স্ট্রোক করছে। কিছু করতে পারে না। তার চিকিৎসার টাকা, ছেলে-মেয়ের খাবার খরচ কই থেকে পাবো আমি জানি না। আল্লাহ আমাকে কোন বিপদে ফেলে দিলো!’
স্থানীয় যুবক সুমন মিয়া বলেন, ‘রাশিদা আপার নৌকাটি চুরি হওয়ার খবর পেয়ে দুঃখ পেলাম। এই ঘাটে আপার নৌকায় অনেক লোক নদী পার হয়ে শহরে যান। আজ নৌকা না থাকায় অনেকে ফিরে গেছেন।’
রাশিদার স্বামী হারুন মিয়া বলেন, ‘আমি অসুস্থ শরীর নিয়েই নদীর পাড় দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত খুঁজেছি। কোথাও নেই আমাদের নৌকাটি।’
ঘাটের পাশেই ছত্রখীল পুলিশ ফাঁড়ি। ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। খোঁজাখুঁজি চলছে। বিস্তারিত পরে জানাবো।’
#